ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁওয়ে শিক্ষিকা মিলি চক্রবর্তী হত্যার তিন বছর পর চারজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে সিআইডি। এই ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তবে আসামিরা নিজেদের নিদোষ দাবি করেছেন। তারা আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচার পাওয়ার চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন। আসামিরা হলেন নিহতের স্বামী সোনা মিয়া, ছেলে রাহুল রায় অর্ক, ভাতিজা মানিক মিয়া ও আমিনুল হক সোহাগ। গত ২০ ফেব্রুয়ারি (সম্প্রতি) অভিযোগপত্র জমা দেয়ার বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন জেলা সিআইডির এএসপি সুমিত চৌধুরী। এই ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, মিলি হত্যাকাণ্ড শুরু থেকেই আত্মহত্যা বলার চেষ্টা করা হচ্ছিল। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করার কথা বললেও তারা মামলা করেনি। পরে পুলিশ মামলা করে। পুলিশ তদন্তভার সিআইডির কাছে দেয়। সিআইডি মামলাটি পুনরায় তদন্ত করে। এই কর্মকর্তা আরও জানান, মূলত চার্জশিটের আসামি আমিনুল ইসলাম সোহাগের সঙ্গে মিলি চক্রবর্তীর পরকীয়ার ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর মিলির পরিবারে ঝামেলার সৃষ্টি হয়। এরপর তাকে অমানবিক নির্যাতন করা হয়। শুধু তাই নয়, ময়নাতদন্ত ও ফরেনসিক প্রতিবেদন থেকে পাওয়া যায় নির্যাতনের পর তিনি অসুস্থ হলে তাকে আত্মহত্যা বলার চেষ্টা করা হয়। জীবন্ত অবস্থায় তাকে পোড়ানোর চেষ্টা করা হয় যাতে সহজে এটিকে আত্মহত্যা বলা যায়।
এ হত্যা মামলার তদন্তভার দেয়া হয় সিআইডির ইন্সপেক্টর আব্দুর রাজ্জাকের কাছে। ভিসেরা প্রতিবেদনের বরাতে এই কর্মকর্তা নিশ্চিত করেন শিক্ষিকা মিলিকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে মারা হয়েছে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন দুজনকে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। পরে তাদের গ্রেফতার দেখায় সিআইডি। তারা হলেন মিলি চক্রবর্তীর ছেলে অর্ক রায় রাহুল ও বিএনপি নেতা আমিনুল ইসলাম সোহাগ। পরে গ্রেফতার করা হয়েছে মিলি চক্রবর্তীর স্বামী সোনা মিয়া এবং মানিক নামের এক ব্যক্তিকে। তবে আসামিরা এখন জামিনে আছেন। এ বিষয়ে সিআইডির এএসপি সুমিত চৌধুরী বলেন, মামলাটি তদন্ত করতে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে। কারণ পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো মামলা হয়নি বরং এটিকে আত্মহত্যা বলা হয়েছে। এমন একটি মামলা শেষ পর্যন্ত তদন্ত করতে পেরে আমাদের ভালো লাগছে। আশা করি আদালতের মাধ্যমে দোষীদের বিচার নিশ্চিত হবে।
তবে আসামিরা সকলেই নিজেদের দোষ অস্বীকার করে তারা আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচার পাওয়ার চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, বিগত ২০২১ সালের ৮ জুলাই সকালে শহরের কালীবাড়ি এলাকার মোহাম্মদ আলী সড়কের পাশে তাঁতীপাড়ার নিজ বাসার পাশ থেকে মিলি চক্রবর্তীর পুড়ে যাওয়া মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে এই ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার মামলা না করলে পুলিশই নিজে বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
